বাংলাদেশে বেকারত্ব সমস্যা এবং অনিশ্চিত ভবিষ্যত
দিন যত যাচ্ছে, দেশে চাকরির ভবিষ্যৎ ততই অবনতির দিকে পা দিচ্ছে। যেখানে সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী সদ্য গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করা ছাত্র ছাত্রীরা। শুধু সরকারী চাকুরীই নয়, বেসরকারি চাকুরীও দিন দিন চলে যাচ্ছে হাতের নাগালে। এক প্রতিবেদন এ জানা গেছে, ২০২৩ সালে দেশে বেকারের সংখ্যা ছিল ২৪ লাখ ৭০ হাজার, সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী বেকারের সংখ্যা ২০২৪ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ২৫ লাখ ৯০ হাজার। অর্থাৎ বাংলাদেশে বেকারত্ব সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই সমস্যার সমাধান কি? কোন দিকে যাচ্ছে দেশের তরুণদের ভবিষ্যৎ? তারা কি নিজেদের এই চ্যালেঞ্জে শামিল করতে প্রস্তুত? ব্যাবসা করতে তারা কতটুকু আগ্রহী? নাকি বিদেশে পড়াশোনার মাধ্যমে ক্যারিয়ার গঠনে তারা অনেকেই আগ্রহী? জানতে হলে পড়ে ফেলুন পুরো লেখাটি।
বাংলাদেশের চাকরি বাজারের চ্যালেঞ্জ
সরকারি চাকরি বা বেসরকারি চাকরি, দুটোই এখন তরুনদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারি চাকুরির পেছনে ছুটছে দেশের লাখো তরুন-তরুণী। বিসিএস থেকে শুরু করে যেকোনো গ্রেডের সরকারি চাকুরি পরিক্ষার জন্য মাত্র কয়েকটি সিটের জন্য লড়ে প্রায় লক্ষাধিক পরীক্ষার্থী, যেখানে পাশের হার দাড়ায় মাত্র ২/৩%, বাকিদের শুন্য হাতেই ফিরতে হয়। সরকারি চাকুরি ছাড়াও বেসরকারি চাকুরিতেও এখন বেশ প্রতিযোগিতা লক্ষণীয়। একটি বা দুইটি পদের জন্য যেকোনো চাকুরির বিজ্ঞপ্তি দেয়া মাত্রই জমা পড়ে শত শত আবেদন। সেই কারনেই ব্যর্থতার হার এর তুলনায় সফলতার হার অতি নগণ্য।
এছাড়াও আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা চাকরির ক্ষেত্রের কার্যক্রম এর সাথে অনেকাংশেই মিলে না। যেই কারনে ছাত্রছাত্রীরা তাদের রিয়েল লাইফ স্কিল ডেভেলপমেন্ট এ অনেক পিছিয়ে থাকছে। স্কিল ও অভিজ্ঞতার ঘাটতি তে চাকরি থেকে পিছিয়ে পড়ছে দেশের সদ্য গ্র্যাজুয়েটরা। মূল কারণ বিবেচনা করতে গেলে, সর্বপ্রথম আলোচনায় আসে, দেশে কর্মসংস্থান এর অভাব। দেশে যে পরিমাণ শিক্ষিত ছাত্র ছাত্রী বের হচ্ছে প্রতি বছর, সেই তুলনায় চাকরি খুবই নগণ্য। এইজন্যই গ্র্যাজুয়েটদের জন্য দেশে চাকরি পাওয়া দিন দিন আরোই চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়ছে। এছাড়াও বাংলাদেশের বেতন কাঠামো অনেকের জন্য অসন্তোষ জনক। অনেক ক্ষেত্রে ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েট দের মাসিক বেতন খুবই সামান্য হয়ে থাকে, অনেকের এই বেতনে জীবন নির্বাহ করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। এরুপ নানা কারনে দেশের চাকরি বাজার একটি চ্যালেঞ্জের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে হতাশার চিত্র
বর্তমান সময়ে শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে হতাশা একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঠিক উপরের আলোচনা অনুযায়ী ভেবে দেখলেই পাবেন যে, উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পরও অনেকেই প্রত্যাশিত চাকরি বা কর্মসংস্থানের সুযোগটাই পাচ্ছে না। চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা দিন দিন বাড়ছে, অথচ দক্ষতার ঘাটতি এবং অভিজ্ঞতার অভাবে তরুণরা পিছিয়ে পড়ছে। এ ছাড়াও পরিবার এবং সমাজের উচ্চ প্রত্যাশা তরুণদের উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে। পরিবার সাপোর্ট দিলেও অনেক সময় পারিপার্শ্বিক চাপ, হতাশা অথবা সমাজের চাপ তাদের জন্য আরও বেশি ডিপ্রেশন এর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বাংলাদেশের শিক্ষিত বেকারত্ব নামক ট্যাগ গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট দের চিন্তার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিদেশের উন্নত শিক্ষাব্যবস্থার আকর্ষণ
ইতোমধ্যেই আমরা আলোচনা করেছি যে বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারত্বের হার দিন দিন বাড়ছে, যা আমাদের সমাজের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পরও অনেক তরুণ-তরুণী দেশে পর্যাপ্ত চাকরির সুযোগ না থাকায় তারা দিন দিন বিদেশে উন্নত প্রযুক্তি এবং স্কিল ডেভেলপিং শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে ঝুঁকছে। ২০২৩ সালের এক জরিপে দেখা গিয়েছে, ৫৫ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী ক্যারিয়ার গড়ার জন্য বিদেশে যেতে আগ্রহী। তাদের মতে, বিদেশে পড়াশোনা করার সুবিধা দেশের তুলনায় অনেক বেশি এবং ক্যারিয়ার গঠনে বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলো অনেক প্রভাবশালী।
বিদেশে পড়াশোনার ক্ষেত্রে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা এবং গ্লোবাল নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ তরুণদের জন্য নতুন দ্বার উন্মুক্ত করছে। উন্নত গবেষণা সুবিধা, অত্যাধুনিক ল্যাব, এবং বিশ্বমানের শিক্ষকদের সঙ্গে পড়ার সুযোগ তরুণদের কর্মজীবনের জন্য একটি শক্ত ভিত্তি গড়ে তুলছে। ফলে, আমাদের অনেক শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য বিদেশ যেতে আগ্রহী হয়ে উঠছে। বাংলাদেশে চাকরির সংকট ও সমাধান যদি দ্রুত না হয়, তাহলে ধারণা করা যায় যে এই বিদেশমুখী শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন আরও বাড়তে থাকবে। আর এই কারণেই আমাদের দেশের অনেক সংস্থা এখন শিক্ষার্থীদের বিদেশে পাঠানোর জন্য নিরাপদ এবং বিশ্বস্ত মাধ্যম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
ক্যারিয়ার গঠনে বিদেশে উচ্চশিক্ষা
বিশ্বমানের দক্ষতা অর্জন
একজন ছাত্রের স্কিল গঠনের জন্য ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি গুলো যথেষ্ট ভুমিকা রাখে। বৈশ্বিক মানদণ্ডে যদি আপনি পড়াশুনা করেন তবে আধুনিক প্রযুক্তি, সফট স্কিল, এবং পেশাদারিত্বের উন্নয়ন আপনার ক্যারিয়ার এ খুব ভাল একটা প্রভাব ফেলতে পারে। ঠিক এই ধরনের প্রশিক্ষণ চাকরি ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার বাজারে এগিয়ে রাখে এবং আপনার দক্ষতাকে গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডে নিয়ে যায়।
আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা এবং নেটওয়ার্কিং
একই সঙ্গে গ্লোবাল নেটওয়ার্ক তৈরি করে। স্বাভাবিক ভাবেই আপনি যখন বাইরের দেশের মানুষের সাথে চলাফেরা করবেন, মেলামেশা করবেন, আপনি দ্রুতই বিভিন্ন কালচারের সঙ্গে মিশে যেতে পারবেন, এবং আপনার পার্সোনাল নেটওয়ার্কিং বারাতে পারবেন। আর ঠিক আপনার এই গুনগুলোই ভবিষ্যতে পেশাগত সুযোগগুলো কে বহুগুণে বৃদ্ধি করে।
উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা এবং গ্লোবাল চাকরির সুযোগ
অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, আমেরিকা, যুক্তরাজ্য যেকোনো দেশেই পড়াশুনার মান বিশ্বমানের। এই গ্লোবালি পড়াশুনা সুযোগটা একজন ছাত্রকে গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডের চাকরি করার সুযোগ করে দেয়। তার জন্য দেশে বা দেশের বাইরে যেকোনো ধরণের চাকরি করা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। নিজের কাজের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা বাড়ানোর সাথে সাথে নিজের ব্র্যান্ড ভ্যালুও বাড়তে থাকে।
আর্থিক নিরাপত্তা এবং উচ্চ আয়ের সম্ভাবনা
পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট-টাইম চাকরি করার সুযোগ তাদের আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে সাহায্য করে। কারণ উন্নত দেশ গুলো তে পড়াশুনার পাশাপাশি চাকরি করার অনেক সুযোগ থাকে শিক্ষার্থী দের জন্য। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থী দের আর্থিক চিন্তার কোন কারণ থাকে না এবং এখান থেকে অনেক উচ্চ আয়ের মাধ্যমে পরিবার কে সাহায্য করার সুযোগও থাকে। এতে পরিবার এর উপর নির্ভরতা অনেক কমে আসে এবং বাস্তব জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সক্ষমতা তাদের মধ্যে চলে আসে।
শিক্ষার্থীদের এই স্বনির্ভরতা শুধু আর্থিক দিকেই নয়, তাদের মানসিক সকল ধরণের চাপ থেকে মুক্ত রাখে। আর্থিক অসচ্ছলতা মানুষকে ডিপ্রেশনে ভুগায়। তাই বিদেশের বাস্তবমুখী শিক্ষা ও কাজের অভিজ্ঞতা তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, এভাবে তারা নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কিং তাদের ক্যারিয়ার সম্ভাবনাকে বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।
দেশে ফিরেও অবদান রাখার সুযোগ
অনেক কোম্পানি বিদেশের ডিগ্রি ও কাজের অভিজ্ঞতাকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করে। তারা মনে করে, গ্লোবাল পপুলার ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করে আসা শিক্ষার্থীরা নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও আধুনিক জ্ঞান নিয়ে আসে। এই ধরনের শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তি, গবেষণা, এবং গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডে কাজ করার দক্ষতায় পারদর্শী। তাদের শেখার পদ্ধতি, প্র্যাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা, এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা কোম্পানির জন্য বড় সম্পদ হতে পারে। ফলে, তারা স্থানীয় ডিগ্রির তুলনায় আন্তর্জাতিক মানের ডিগ্রিধারীদের উপর বেশি ভরসা করে। এটি শিক্ষার্থীদের শুধু ক্যারিয়ারে নয়, নিজেদের প্রতিযোগিতার জগতে এগিয়ে থাকার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সমাধান কি?
উপরের আলোচনায় স্পষ্ট লক্ষণীয় যে, দেশের শিক্ষার্থী বিদেশমুখী হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। তার কারণ জরিপ সহকারে ব্যাখ্যা করা হয়ে গিয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে এর সমধান কি? দেশে কি ভাল কিছু করা সম্ভব না? অবশ্যই সম্ভব। প্রথমত দেশের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা উচিত, সরকারি বা বেসরকারি কর্মসংস্থান এর স্বল্পতার কারনে শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত পরিমাণ সুযোগ পাচ্ছে না তাদের দক্ষতা প্রমানের। যার কারনে বেকারত্বের হার দিন দিন বেড়েই চলেছে। দ্বিতীয়ত আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা আরও উন্নত করা উচিত। রিয়েল লাইফ লার্নিং এবং এর ইমপ্যাক্ট নিয়ে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা উচিত আমাদের শিক্ষার্থীদের, যেন তাদের একাডেমিক জ্ঞান কর্মজীবনে প্রভাব ফেলতে পারে। যদি এই প্রধান সমস্যাগুলোর কোন সমাধান না আসে, দিন দিন শিক্ষার্থী দের বিদেশমুখী হওয়ার প্রবণতা বাড়তেই থাকবে।
বিদেশে উচ্চশিক্ষাই যদি হয় লক্ষ্য
দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি সবার কাম্য হলেও, অনেকেই আবার জীবনের লক্ষ্য পূরণে বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান। এই পথচলায় নির্ভরযোগ্য সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে iStock Education এবং তাদের কার্যক্রম যথেষ্ট মান সম্পন্ন।
iStock Education আপনাকে প্রাথমিক পরামর্শ থেকে শুরু করে কাগজপত্র প্রস্তুত, রেজিস্ট্রেশন, ভিসা প্রসেসিং, এবং বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করে। আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, নিউজিল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে। iStock Education অফিস যমুনা ফিউচার পার্কের ঠিক বিপরীত পাশে অবস্থিত। বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণে আপনার যদি সঠিক দিকনির্দেশনার প্রয়োজন হয়, তাহলে iStock Education সবসময় আপনার পাশে রয়েছে।